মেট্রোরেলের ভাড়ায় বসছে ১৫% ভ্যাটকৃষি ও নিত্যপণ্যে শুল্ক না বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকরছাড় কমাতে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীবাড়তি রাজস্ব সংগ্রহে করছাড় ও অব্যাহতি কিছুটা কমাবে এনবিআরইআরডি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী বাড়ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ঝুঁকি
No icon

বাজেটে কর ছাড়ে শুভংকরের ফাঁকি

প্রস্তাবিত বাজেটে করছাড় দিলেও তাতে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। যেমন করপোরেট কর, এক ব্যক্তির কোম্পানির কর এবং সব রপ্তানিমুখী শিল্পে একই হারে করারোপের মাধ্যমে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে কঠিন শর্ত। এ কারণে প্রকৃতপক্ষেই শিল্প করছাড়ের সুবিধা নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে উদ্যোক্তাদের মনে প্রশ্ন জেগেছে। আবার অর্থবিলের মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশে কয়েকটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এতে উৎসে কর আদায়ের ব্যর্থতার দায়ে প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন, খেলাপি ঋণের মওকুফের ওপর করারোপ এবং কোম্পানির সুদ আয়ে দ্বিগুণ করারোপ করা হয়েছে; যা শিল্পমালিকদের ভাবিয়ে তুলেছে।এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় করপোরেট কর হ্রাস। এ নিয়ে টানা ৩ অর্থবছরে এ কর হ্রাস করা হলো। আগের দুবার শর্তহীনভাবে করপোরেট করছাড় দেওয়া হলেও এবার কঠিন শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।

তা হলো-সব ধরনের প্রাপ্তি ও আয় ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে করতে হবে। এছাড়া ১২ লাখ টাকার বেশি ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যাংক স্থানান্তরের মাধ্যমে করতে হবে। অর্থাৎ, ১২ লাখ টাকা বেশি ক্যাশ লেনদেন করলে ওই কোম্পানি করছাড়ের সুবিধা পাবে না, আগের হারেই করপোরেট কর দিতে হবে। কোম্পানি ছোট হোক বা বড়-সবার ক্ষেত্রেই এ শর্ত প্রযোজ্য।অর্থনীতিবিদ ও শিল্পমালিকরা বলছেন, ছোট ও বড় প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ লেনদেনের সীমা এক হতে পারে না। বড় প্রতিষ্ঠানের লেনদেন বেশি হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে ছোট প্রতিষ্ঠানকে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, বড় প্রতিষ্ঠানকেও সেই শর্ত মানতে হবে; যা অযৌক্তিক ও বাস্তবতাবিবর্জিত।

শনিবার বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন করপোরেট কর হ্রাস প্রসঙ্গে বলেন, সরকার বিভিন্ন জায়গায় করছাড় দিয়েছে। আবার সামগ্রিকভাবে দেওয়ার চেয়ে নিয়েছে বেশি। করের করপোরেট ছাড় দিয়েছে ঠিক, ছাড়ের চেয়ে নেওয়ার ব্যালেন্সটি অর্থমন্ত্রীর পক্ষেই বেশি যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, করপোরেট কর আড়াই শতাংশ কমানো হয়েছে, যা প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। তবে অগ্রিম আয়কর ও আগাম কর বিদ্যমান থাকায় এই কর সুবিধা ব্যবসায়ীদের জন্য তেমন সুফল বয়ে আনবে না। কারণ, অগ্রিম আয়কর ও আগাম কর সমন্বয় করা হয় না। যদি এই কর ফেরত দেওয়াই হয়ে থাকে, তাহলে নেওয়ার দরকার কী। করপোরেট কর না কমিয়ে এগুলো উঠিয়ে দিলে ভালো হতো।

এ তো গেল সাধারণ প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর। বাজেটে সব রপ্তানিমুখী শিল্পে একই হারে (সাধারণ শিল্পে ১২ শতাংশ এবং সবুজ শিল্পে ১০ শতাংশ) করারোপের ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী, যা বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে। তবে রপ্তানির উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ-অর্থাৎ রপ্তানির উৎসে কর দ্বিগুণ করা হয়েছে। প্রায় বেশির ভাগ রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান কেটে নেওয়া উৎসে কর অনুযায়ী রিটার্নে আয় দেখিয়ে থাকে। তাই সাধারণ হারে কর দেয় না। বাজেটে উৎসে কর দ্বিগুণ করায় রপ্তানিকারকদের বেশি কর দিতে হবে।