কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম কর কেটে রাখা এবং তা ফাইনাল সেটেলমেন্ট না হওয়ায় স্টিল, সিমেন্টসহ নির্মাণ খাত বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড আয়োজিত পোস্ট বাজেট ডিসকাসনে এসব কথা তুলে ধরেন স্টিল, সিমেন্ট, পেইন্টস, রিয়েল এস্টেট খাতের উদ্যোক্তার।খাতের উদ্যোক্তারা বলেন, স্টিলের কাঁচামাল আমদানিতে ২ শতাংশ হারে এডভান্স ট্যাক্স দিতে হয় দেশের উৎপাদকদের। সিমেন্টের কাঁচমাল আমদানিতে দিতে হয় আরো বেশি। পণ্য উৎপাদনের আগেই দেয়া এ করে বিপুল পরিমাণ ক্যাপিটাল আটকে যায়।অগ্রিম কর হিসাবে কেটে রাখা এই কর আবার কোম্পানির মিনিমাম কর হিসাবে কেটে রাখায় বিদ্যমান করপোরেট করের তুলনায় বেশি দিতে হয় তাদের। ফলে কর ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এ কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন খাতের উদ্যোক্তারা।বাজেট ব্যবসার জন্য কেমন হলো তা জানিয়ে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টির রুপালি চৌধুরী বলেন, খাত ভিত্তিক সমস্যার পাশাপাশি কিছু বিষয় সব ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। করপোরেট করহারে ছাড়ের জন্য দেওয়া কঠিন শর্ত, ওয়ার্কারস প্রফিট পারটিসিপেশন ফান্ড (ডব্লিউপিপিএফ) এর ব্যয় ডিজঅ্যালাও করাসহ কয়েকটি কারণে ব্যবসায়ীদের করের ইফেক্টিভ রেট না কমে বরং বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, কোম্পানিগুলোকে তাদের মুনাফার ৫ শতাংশ ডব্লিওপিপিএফ এ রাখতে হয়, যা এতদিন অ্যালাওয়েবল এক্সপেন্স হিসেবে সুবিধা পেত কোম্পানিগুলো। প্রস্তাবিত বাজেটের অর্থবিলে এ ফান্ডকে ডিজঅ্যালাওয়েবল হিসেবে গন্য করার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ শ্রম আইন মানতে গিয়ে কোম্পানিগুলোকে ওই ব্যয়ের উপর ট্যাক্স দিতে হবে।ট্যাক্স সুবিধা পাওয়ার শর্ত হিসাবে ১২ লাখ টাকার কম ক্যাশ ট্রানজেকশন করতে হবে। আমাদের মতো এসএমই শিল্প নির্ভর ও ইনফরমাল ইকোনমিতে এটা সম্ভব নয়। যেসব কোম্পানির হাজার হাজার কোটি টাকা ট্রানজেকশন হয়, তাদের এই শর্ত মানা বাস্তবে সম্ভব নয়, যোগ করেন তিনি।
নির্মাণ উপাদানের মধ্যে পেইন্টকে লাক্সারি আইটেম থেকে সরিয়ে নিত্যপণ্য করা এবং এর ওপর থেকে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি করেন রূপালি চৌধুরী।তিনি বলেন, বিশ্বের কোনো দেশেই পেইন্টসে সম্পূরক শুল্ক নেই। এ পণ্যটি এখন কনস্ট্রাকশনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।মেট্রোসেম সিমেন্ট অ্যান্ড মেট্রোসেম স্টিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. শহীদুল্লাহ বলেন, এবারের বাজেটে আমাদের জোর দাবি ছিল কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে উৎসে কর প্রত্যাহার। রড-সিমেন্ট উভয় খাতই এর জন্য ভুগছে।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড