কৃষি ও নিত্যপণ্যে শুল্ক না বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকরছাড় কমাতে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীবাড়তি রাজস্ব সংগ্রহে করছাড় ও অব্যাহতি কিছুটা কমাবে এনবিআরইআরডি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী বাড়ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ঝুঁকিজুন নাগাদ আয়কর রিটার্ন ৪৫ লাখে উন্নীত হবে
No icon

অদক্ষতার কারণে ৮৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

দেশে ৬৮ শতাংশ মানুষ করযোগ্য আয় করার পরও আয়কর দেন না। অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কর দেওয়ার যোগ্য হওয়ার পরেও কর দেন না। অন্যদিকে জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে ২ লাখ ১৩ হাজার কোম্পানি রেজিস্টার্ড হলেও রিটার্ন দাখিল করে মাত্র ৪৫ হাজার কোম্পানি। দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে সরকার বছরে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। গতকাল সোমবার করপোরেট খাতে কর স্বচ্ছতা :বাজেটে সরকারি আয়ের অভিঘাত শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এ তথ্য তুলে ধরে। এতে বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। করপোরেট করহার বেশি হওয়ায় কর ফাঁকির প্রবণতাও বাড়ছে বলে মনে করছে সিপিডি। খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বৈশ্বিক পর্যায়ে করপোরেট ট্যাক্স হার কমে আসছে। দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশে বেড়েছে। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী বছরে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকা কীভাবে ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে, তার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, দেশের জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে ২ লাখ ১৩ হাজার কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলেও রিটার্ন দাখিল করে মাত্র ৪৫ হাজার কোম্পানি। আবার দেশে যে পরিমাণ মানুষ কর দিতে পারে, তার ৬৮ শতাংশ কর দিচ্ছে না। এই বিপুল অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী সরকার প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

এর আগে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত ৩৬ শতাংশ ছিল, সেখান থেকে এখন ৩০ শতাংশ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতির আকার যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি বাড়েনি। এর ফলে এই খাতের বড় একটা কর আমাদের অর্থনীতির বাইরে রয়ে গেছে। এর ফলে কর ক্ষতির পরিমাণও উত্তরোত্তর বাড়ছে। বাংলাদেশের প্রায় ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ২৫ লাখ লোক কর দেয়। এমন পরিস্থিতিতে কর-জিডিপির অনুপাত ৮ শতাংশে নেমে আসার তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ী একটি উদীয়মান অর্থনীতির দেশকে অবশ্যই কর-জিডিপির হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ হওয়া উচিত। আমাদের কর আদায় পরিস্থিতি সেই মানে উন্নীত করতে হলে আমরা প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছি। করপোরেট করহার বেশি হওয়ায় কর ফাঁকির প্রবণতাও বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের করপোরেট করহার এখনো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। অথচ জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আদায় এশিয়া এমনকি আফগানিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম। অর্থাৎ দেশে উচ্চ করহার প্রদান করছে ঠিকই, কিন্তু তার যে সুফল সেটা আমরা ভোগ করতে পারছি না। আবার কর কমিয়ে দিলেও রাজস্ব বাড়ে, সেটারও নিশ্চয়তা নেই। দক্ষিণ এশিয়ায় ট্যাক্স জিডিপি রেশিও এবং করহারের মধ্যে ফারাকটা বাংলাদেশে সর্বোচ্চ।