অনলাইনে ৯৬ ঘণ্টা ভ্যাট কার্যক্রম বন্ধ থাকবেরমজানে ভোজ্যতেলের দাম কমাতে কর অব্যাহতিখোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানের শুল্ক বাকি ১৮ হাজার কোটি টাকা, ৩৭ চিঠি দিয়েও ব্যর্থ এনবিআরভ্যাটের একক রেট করতে পারলে ফাঁকি কমে যাবেজুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় জাতীয় ভ্যাট দিবস উদযাপন
No icon

আয় না থাকলেও দুই হাজার টাকা কর

করযোগ্য আয় না থাকলেও আগামী বছর থেকে আয়কর দিতে হবে। রিটার্ন জমার স্লিপ বা প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পেতে শূন্য রিটার্ন জমা (করযোগ্য আয় না দেখিয়ে রিটার্ন জমা) দিলেও দুই হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে।কর অফিস থেকে রিটার্ন জমার স্লিপ না নিলে ৩৮ ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা পাওয়া যাবে না। কর আদায় বাড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আসন্ন বাজেটে টিআইএন (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) বাতিলের সুযোগ দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।বর্তমানে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার ক্ষেত্রে পুরুষ করদাতার বার্ষিক আয় তিন লাখ টাকা, মহিলা অথবা ৬৫ বছরের বেশি পুরুষ করদাতার ক্ষেত্রে সাড়ে তিন লাখ টাকা, প্রতিবন্ধী করদাতার ক্ষেত্রে সাড়ে চার লাখ টাকা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার বার্ষিক আয় চার লাখ ৭৫ হাজার টাকা করমুক্ত।এ সীমার নিচে আয় থাকলে করদাতা এতদিন শুধু শূন্য আয় দেখিয়ে রিটার্ন জমা দিতে পারতেন, এ ক্ষেত্রে কোনো কর দিতে হতো না। বার্ষিক আয় করসীমার এক টাকার বেশি থাকলেও তাকে ন্যূনতম আয়কর দিতে হয়।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতার ন্যূনতম করের হার পাঁচ হাজার টাকা। অন্য সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতার ন্যূনতম করের হার চার হাজার টাকা।আর সিটি করপোরেশন ছাড়া অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত করদাতার ন্যূনতম করের হার তিন হাজার টাকা।সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী বাজেটে কোনো ব্যক্তি শূন্য আয় দেখিয়ে রিটার্ন জমা দিলে স্লিপ পেতে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা কর দিতে হবে। অন্যদিকে আয় ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে নির্ধারিত হারে আয়কর দিতে হবে। বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এ প্রস্তাব দেওয়ার কথা রয়েছে।একজন গৃহিণীর ১০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র আছে। কিন্তু তার করযোগ্য আয় নেই। দুই বছর আগে ব্যাংকে টিআইএন দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনেছিলেন। চলতি অর্থবছরে টিআইএনের পরিবর্তে ব্যাংকে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক করা হয়।

স্লিপ না দিলে সঞ্চয়পত্রের সুদ আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটার বিধান রয়েছে। আর স্লিপ জমা দিলে ১০ শতাংশ উৎসে কর কাটা হয়। বাড়তি উৎসে কর কাটার হাত থেকে বাঁচতে চলতি অর্থবছরে ওই গৃহিণী শূন্য রিটার্ন জমা দিয়ে স্লিপ নিয়েছেন। কিন্তু আগামী অর্থবছর থেকে শূন্য রিটার্ন জমা দিলেও স্লিপ পেতে তাকে দুই হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে।বর্তমানে ৩৮টি সরকারি-বেসরকারি সেবা পেতে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক। এগুলো হচ্ছে-ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাঁচ লাখ টাকা বেশি ঋণ নিলে; কোম্পানি পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার হলে; আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ (আইআরসি-ইআরসি) নিতে; সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে; সমবায় সমিতি নিবন্ধন নিতে; বিমা কোম্পানির সার্ভেয়ার হতে; ১০ লাখ টাকা বেশি মূল্যের জমি-ফ্ল্যাটের দলিল করতে; ক্রেডিট কার্ড নিতে; পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যপদ নিতে; ড্রাগ লাইসেন্স, ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পেতে; গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে; ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে বাচ্চা ভর্তি করতে; কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিতে; অস্ত্রের লাইসেন্স নিতে; ব্যাংকে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে; ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে; নির্বাচনে অংশ নিতে; সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ১৬ হাজার টাকা হলে; এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ১৬ হাজার টাকার বেশি বেতন গ্রহণ করলে; পণ্য আমদানি-রপ্তানির বিল অফ এন্ট্রি জমা দিতে রিটার্ন জমার স্লিপ বাধ্যতামূলক।