কিছু খাতের বিকাশে বিভিন্ন সময় বিদ্যমান কর থেকে ছাড় বা অব্যাহতি দিয়ে থাকে সরকার। এর অংশ হিসেবে আইটি বা সফটওয়্যার, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, ক্ষুদ্রঋণ, পোলট্রি ও মৎস্যসহ ছয় খাতে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি করপোরেট কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রকাশিত প্রত্যক্ষ করব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতির আকারের বিবেচনায় বাংলাদেশের কর আদায়ের হার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম। শুধু করের আওতা কম কিংবা কর ফাঁকি নয়, বিপুল কর অব্যাহতি বা ছাড়ও এর কারণ। তাই কোন খাতে কত কর ছাড় দেওয়া হয়, এমনকি শিল্প খাতে এর প্রভাবই বা কেমন এ নিয়ে কোনো পরিসংখ্যান ও পর্যবেক্ষণ ছিল না। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচির আওতায় এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করার শর্ত রয়েছে। একই সঙ্গে করছাড় সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসতে প্রতি বাজেটে নির্দিষ্ট হারে করছাড় তুলে দেওয়ার শর্তও রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্যক্ষ করব্যয় বলতে রেয়াত, ছাড়, অব্যাহতি, হ্রাসকৃত হারে করারোপ এবং মোট করযোগ্য আয় পরিগণনা থেকে আয় বাদ দেওয়াকে বোঝায়। এটি এক ধরনের ভর্তুকি। এই ভর্তুকি কর হিসেবে আদায় হলে মোট করের পরিমাণ বাড়ত। আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সংগতি রেখে এনবিআর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মাঠ পর্যায়ের বাস্তব তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ-পূর্বক প্রত্যক্ষ করব্যয় প্রাক্কলন করেছে। সে অনুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রত্যক্ষ করব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা।এর মধ্যে শুধু করপোরেট করের আওতায় ক্ষুদ্রঋণ খাতকে ১৫ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা ছাড় বা অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া আইটি ও সফটওয়্যারে ১ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতে ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা, জ্বালানি ও বিদ্যুতে ৮ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজে ৪ হাজার ৬১২ কোটি টাকা এবং পোলট্রি ও মৎস্য খাতে ১৪৩ কোটি টাকা ছাড় দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এ ছয় খাতে ছাড় বা অব্যাহতির পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা।