বাড়তি রাজস্ব সংগ্রহে করছাড় ও অব্যাহতি কিছুটা কমাবে এনবিআরইআরডি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী বাড়ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ঝুঁকিজুন নাগাদ আয়কর রিটার্ন ৪৫ লাখে উন্নীত হবেউল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল
No icon

আশানুরূপ রাজস্ব আদায় না হওয়ায় হিমশিম খাচ্ছে সরকার

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সর্বোচ্চ সুদ উঠেছে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ২০ শতাংশ সুদে দুই বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড বিক্রি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ সুদ এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ সময়ে আন্তঃব্যাংক লেনদেনেও সুদহার দ্রুত বেড়ে সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ শতাংশে উঠেছে। গত জুনে যা ৭ শতাংশের নিচে ছিল। গত জুনে ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ছিল ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। ডিসেম্বরে এসে তা ১১ দশমিক ২০ থেকে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠেছে। এর মানে, এ ক্ষেত্রে গত ছয় মাসেই সুদহার বেড়েছে ৪২ থেকে ৪৬ শতাংশ। আর গত জুনে দুই বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ থেকে এখন ১০ দশমিক ২০ শতাংশে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে সুদহার বেড়েছে ২৬ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া অনেক আগ থেকে সঞ্চয়পত্রে সরকারকে ১১ শতাংশের মতো সুদ গুনতে হচ্ছে।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকারের সুদ ব্যয় বাবদ যে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তার মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎসে সুদ পরিশোধে ব্যয় ধরা হয় ৮২ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশি উৎসে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। গত জুনের পরিস্থিতির ভিত্তিতে এ হিসাব করা হয়েছিল। তখন অভ্যন্তরীণ উৎসে সরকারের ঋণের বেশির ভাগই দিচ্ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য এখন সরকার কোনো ঋণ না দিয়ে বাজার থেকে নিলামের মাধ্যমে নিতে হচ্ছে। ফলে সুদহার দ্রুত বাড়ছে। অন্যদিকে, গত জুনে ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ছিল ১০৭ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১০৮ টাকা। এখন প্রতি ডলারে ২ টাকার বেশি বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি ঋণের সুদহারও বেড়েছে।  

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির বিকল্প নেই। এমনিতেই এখন ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি কম। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের মতো বিক্রি করে ৭৭ হাজার কোটি টাকার বেশি তোলা হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে ঋণ দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে তুলতে হচ্ছে। ফলে ঋণের সুদহার দ্রুত বাড়ছে। আবার আইএমএফের শর্ত মেনে রিজার্ভ বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে বিদেশি ঋণ নিচ্ছে। দুয়ে মিলে সরকারের সুদ ব্যয়ের চাপ বাড়ছে। এখন রাজস্ব বাড়ানো ও ব্যয় সংকোচনের বিকল্প নেই।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ১৬ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা কম। অবশ্য গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।