করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দফায় দফায় লকডাউনের পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। যা প্রয়োজনীয় হলেও, এর জেরে যে ভারতীয় অর্থনীতির সরাসরি সঙ্কোচন অবশ্যম্ভাবী, সে ব্যাপারে সহমত দেশি-বিদেশি সমস্ত মূল্যায়ন ও পরামর্শদাতা সংস্থা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের করানো এক সমীক্ষাতেও একই আশঙ্কার ছবি স্পষ্ট হয়েছে। এ বার খাস বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিল, সেই আশঙ্কা অমূলক নয়। ২০২০ সালে বিশ্ব অর্থনীতির ৫.২% সঙ্কোচনের পাশাপাশি, ভারতের জিডিপি ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ৩.২% কমতে চলেছে।
সোমবার মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস-ও জানিয়েছে, এই অর্থবর্ষে ভারতীয় অর্থনীতির বহর ৫% কমতে পারে। পাশাপাশি তাদের বক্তব্য, কেন্দ্র যে ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করেছে তা আদতে জিডিপির ১.২% মাত্র। অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে তা যথেষ্ট নয়। আর মূল্যায়ন সংস্থা ক্রিসিলের বক্তব্য, এ বছর ব্যাঙ্ক ঋণ বৃদ্ধির হার নামতে পারে ১ শতাংশে।
এ দিন বিশ্ব ব্যাঙ্ক তাদের ‘গ্লোবাল ইকনমিক প্রসপেক্ট’ রিপোর্টে জানিয়েছে, ১৮৭০ সাল থেকে বিশ্ব মোট ১৪ বার মন্দার মুখে পড়েছে। আর অতিমারির কারণে এই প্রথম। যার ফলে বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের ভয়ঙ্করতম মন্দায় ঢুকে পড়েছে বিশ্ববাসী। রিপোর্টের পূর্বাভাস, দফায় দফায় লকডাউনের জেরে যে ভাবে অর্থনীতির চাকা প্রায় স্তব্ধ হয়েছে, তাতে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতিও সরাসরি ৩.২% কমতে পারে। ভাইরাসের প্রভাব ঠেকাতে যে রকম শক্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে, স্বল্পমেয়াদে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে আর্থিক কর্মকাণ্ডে। তবে আগামী অর্থবর্ষে এ দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধির মুখ দেখতে পারে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেছেন, ‘‘করোনা যে গতিতে আঘাত হেনেছে, তাতে ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে।’’
তিনি আরও জানান, আর্থিক ত্রাণ সত্ত্বেও সবচেয়ে বেশি সমস্যার মুখে পড়বে উন্নয়নশীল দেশগুলি। কারণ, সেখানে অধিকাংশ কর্মসংস্থানই অসংগঠিত ক্ষেত্রে। এই প্রেক্ষিতে ভারতে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার ছবি মনে করাচ্ছেন অনেকে। এ বছর একমাত্র চিন সামান্য বৃদ্ধির মুখ দেখতে পারে বলে জানাচ্ছে বিশ্বব্যাঙ্ক।