গতকাল রোববার বেইজিং জানিয়েছে, শেয়ারবাজারে গতি আনতে নতুন যেসব পদক্ষেপ চীন নিয়েছে, তাতে আজ সোমবার সকালে এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তবে শঙ্কা এখনো আছে। শিগগিরই অর্থাৎ আগস্টের শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান ও মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান প্রকাশিত হলে বোঝা যাবে, ফেড আবার নীতি সুদহার বাড়াবে কি না।
স্টক কেনাবেচায় স্ট্যাম্প শুল্ক অর্ধেক করে দেওয়া হবে এবং একই সঙ্গে আবাসন বাজার টেনে তুলতেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জুলাইয়ে চীনের শিল্পোৎপাদন আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে শিল্পোৎপাদনের এই ধীরগতি চলছে। মূলত সে কারণেই শেয়ারবাজার চাঙা করতে চীনের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল। চীনের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা এই পরিবর্তন ভালোভাবেই গ্রহণ করেছেন। বাজারেও তার ছাপ পড়েছে। আজ সকালে দেশটির সিএসআই ৩০০ সূচকের পয়েন্ট ৩ শতাংশ বেড়েছে। চলতি বছর এই সূচক নিম্নমুখী ছিল, সেখান থেকে আজ তা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
এ ছাড়া জাপানবহির্ভূত সূচকের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। গত সপ্তাহেই এই সূচকের কিছুটা উত্থান হয়েছিল, তার ধারাবাহিকতায় আজ আবারও কিছুটা বাড়ল এই সূচক। তবে গত সপ্তাহের আগে টানা তিন সপ্তাহ এই সূচকের পতন হয়েছে। অন্যদিকে জাপানের নিকেই এশিয়া সূচকের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। মূলত জাপানি মুদ্রা ইয়েনের ধারাবাহিক নিম্ন মানের কারণে এটি ঘটেছে। এখন সবার চোখ আগস্টের শিল্পোৎপাদন সূচকে। যদিও বিশ্লেষকদের ধারণা, এ মাসেও সূচক নিম্নমুখী থাকবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত জুলাইয়ে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার আলোকেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সেই বৈঠকে চীনের নেতারা শেয়ারবাজার চাঙা করার অঙ্গীকার করেছিলেন, যদিও অর্থনীতি চাঙা করতে সে রকম অর্থপূর্ণ নীতি সহায়তার কথা বলেননি। এখন অনেক কিছু নির্ভর করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। দেশটির কর্মসংস্থানের সূচক এখন বেশ চাঙা, জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির হার আবারও বেড়েছে। তবে গত সপ্তাহের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ভেতর ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রেই মার্কিন কোম্পানিগুলোর উৎপাদন কমছে। জরিপকারীদের পূর্বাভাস, আগস্টে দেশটিতে ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে, বেকারত্বের হার দাঁড়াবে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
তবে জেপি মর্গানের বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, হলিউডে কলাকুশলীদের ধর্মঘটের কারণে কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়বে। আগস্টে কর্মসংস্থান হতে পারে ১ লাখ ২৫ হাজার। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যানও সিদ্ধান্ত গ্রহণে বড় প্রভাব ফেলবে, অর্থাৎ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকও (ইসিবি) নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে কি না, বিনিয়োগকারীরা সেদিকেও নজর রাখবে।
খবর রয়টার্সের