ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবেমেট্রোরেলে ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চায় আইপিডিস্বর্ণালংকারে ভ্যাট কমানোর দাবি বাজুসের
No icon

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোর আয় কমেছে

কিছুদিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের বড় চারটি ব্যাংকের গত বছরের শেষ প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেই প্রান্তিকে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের সংবাদে ব্লুমবার্গ অ্যানালিস্টস কনসেনসাসের সূত্রে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চারটি বৃহত্তম ব্যাংক, যেমন জেপি মর্গ্যান চেজ, ব্যাংক অব আমেরিকা, সিটি গ্রুপ ও ওয়েলস ফারগোর সম্মিলিত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারে উঠতে পারে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় এ পরিমাণ হবে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার বেশি। 

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, গত বছরের শেষ প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলোর আয় কমেছে। একদিকে ঋণখেলাপ বেড়েছে, আরেক দিকে উচ্চ সুদহারের প্রভাব দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এতে আমানতের সুদ বেড়েছে।

এ ছাড়া ডিসেম্বর মাসে বড় ব্যাংকগুলো জানায়, গত বছর সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের পতনের কারণে দেশটির ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স স্কিম যে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল, তা পুষিয়ে নিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বড় ব্যাংকগুলোর ওপর যে দায় চাপিয়ে দিয়েছে, সেটা তারা এককালীন পরিশোধ করবে। এ কারণেও ব্যাংকগুলোর আয় ও মুনাফায় প্রভাব পড়বে।

একই সঙ্গে ব্যাংকগুলোর ব্যয় সংকোচন চলছে। সিটি গ্রুপ গত কয়েক বছরের মধ্যে বৃহত্তম পুনর্গঠনের মধ্যে আছে; তারা যে ছাঁটাই করছে, তার জন্য বড় ধরনের ব্যয় করতে হবে। ওয়েলস ফারগো গত মাসে বলেছে, চতুর্থ প্রান্তিকে তারা ১০০ কোটি ডলার বিভিন্ন কারণে কর্মীদের মধ্যে পরিশোধের জন্য আলাদা করে রেখেছে।

সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম ছয়টি ব্যাংকের আয় গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে ব্যাংকগুলোর আয় কমলেও বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের শেয়ার কিনে যাচ্ছেন। অক্টোবর মাসের তুলনায় তাদের ব্যাংকের শেয়ার কেনা বেড়েছে ২০ শতাংশ। সেই সঙ্গে ফেডারেল রিজার্ভ গত বছরের শেষ দিক থেকেই বলতে শুরু করেছে, এ বছর নীতি সুদহার কমতে পারে। উচ্চ নীতি সুদহারের কারণে ২০২৩ সালে ব্যাংকগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে যেমন আমানতের সুদহার বেড়েছে, তেমনি বন্ডের মূল্য কমেছে। উচ্চ সুদহারের চাপ কমলেও খেলাপি ঋণের বোঝা বেড়ে যাওয়ার কারণে ব্যাংকের মুনাফায় প্রভাব পড়বে।

মহামারির সময় দেশটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হয়। সেই তুলনায় খেলাপি ঋণ এখন অনেকটা কম। বড় ব্যাংকগুলো মনে করছে, খেলাপি ঋণের বোঝা ধীরে ধীরে কমবে। অনেক ব্যাংকের প্রভিশন গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কমেছে; শেষ প্রান্তিকেও তা কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ক্রেডিট কার্ড, গাড়ি ঋণ ও ভোক্তা ঋণের খেলাপ বেড়েছে। সে জন্য ব্যাংকগুলোর প্রভিশন কমে যাওয়া দেশটির ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্ট মানুষের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে বলে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের মাঝারি সারির চারটি ব্যাংক ধসে যায়। তখন বলা হয়েছিল, নির্দিষ্ট সেই ব্যাংকগুলোর সংকট ছিল ওই ঘটনা। কারণ, বড় ব্যাংকগুলো সুরক্ষিত ছিল। তবে এবার বড় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে, যদিও নীতি সুদহার হ্রাস করা হলে অর্থনীতিতে স্বাভাবিকতা ফিরবে বলে ধারণা করা যায়।