বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মচারীরাও বিভিন্ন দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁদের মূল দাবি, এনবিআরের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে শুল্ক, আবগারি ও আয়কর ক্যাডার থেকে। অধিকার আদায়ে খোলাচিঠি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সেখানে তাঁরা এই দাবির কথা তুলে ধরেছেন। তাঁদের অন্যান্য দাবির মধ্যে আছে অবাধে সংগঠন করার দাবি। সেই সঙ্গে সংগঠনের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান। এনবিআরের চেয়ারম্যান কার্যালয়ে না থাকায় তাঁর কাছে এসব দাবি পেশ করা যায়নি।
খোলাচিঠিতে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সব কর্মচারী–কর্মকর্তা দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি জানিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কেন অন্য ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে, এটা তাঁদের মূল অসন্তোষের বিষয়। বৈষম্যবিরোধী রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিকল্প প্রস্তাব, শুল্ক ও আবগারি ক্যাডার থেকে দুই বছরের জন্য ও আয়কর ক্যাডার থেকে দুই বছরের জন্য সদস্যদের পালাক্রমে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হোক। তাঁদের আক্ষেপ, অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা রাজস্ব কর্মকর্তাদের কষ্ট বুঝতে চান না।
তাঁদের অভিযোগ, মাঠপর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের কর্মকর্তা–কর্মচারী—সবার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। নিচের সারির কর্মচারীদের নিয়মমতো অফিসে আসতে হয়। যদিও বড় কর্তারা যখন-তখন আসেন। নিচের সারির কর্মচারীদের কথায় কথায় বদলি ও বরখাস্ত করা হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, অনেক কর্মকর্তা আছেন নামে নন–টেকার (যাঁরা ঘুষ নেন না, তাঁরা এনবিআরে নন–টেকার নামে পরিচিত); কিন্তু তাঁদের বিমানভাড়া, বাসার খরচ ও অবাধে অফিসের গাড়ি ব্যবহারসহ সব সুবিধা দেওয়া হয়। বেতনের টাকা তুলতে হয় না।
কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আরও দাবি, যাঁদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি, তাঁদের আগে পদোন্নতি দিতে হবে। সেই সঙ্গে যথাসময়ে পদোন্নতি দিতে হবে। ফাইল আটকে রাখা যাবে না; যথাসময়ে পদোন্নতির পরীক্ষা নিতে হবে; যথাসময়ে ডিপিসি করতে হবে; যথাসময়ে নিয়োগ দিতে হবে; নিয়মমাফিক বদলি ও পদায়ন করতে হবে; কোনো ধরনের বদলি–বাণিজ্য মেনে নেওয়া হবে না; বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে স্বামী–স্ত্রী উভয়ে চাকরিজীবী হলে তাঁদের সুবিধামতো জায়গায় বদলি করতে হবে; সামান্য কারণে কর্মচারীদের বদলি করা যাবে না; ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খারাপ আচরণ, কর্মচারীদের শোকজ দেওয়া বা বরখাস্ত বন্ধ করতে হবে; প্রতিটি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের দাপ্তরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।