বঙ্গবন্ধুর নামে থাকা প্রতিষ্ঠানে অনুদানে করছাড় বাতিল করছে সরকারখেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমলদেশে উৎপাদিত প্রসাধনীতে করের বোঝা, আমদানিতে ছাড়ভোজ্যতেল আমদানিতে কমলো ভ্যাটখেজুর আমদানিতে শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের সুপারিশ
No icon

মূল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে কোম্পানির মূলধন কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা থাকতে হবে

বর্তমানে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ৩৪৩টি। এর ৬২ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার কম। অবশ্য এ তালিকায় থাকা সাফকো স্পিনিংয়ের মূলধন ঘাটতি মাত্র ২ লাখ টাকা এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ঘাটতি মাত্র ৫৭ লাখ টাকা। আরও পাঁচটির মূলধন সীমার তুলনায় ঘাটতি আছে পাঁচ কোটি টাকা বা তারও কম।

এখন যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন এর তুলনায় কম রয়েছে, সেগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূলধন ওই সীমায় উন্নীত করতে সময় বেঁধে দেওয়ার চিন্তা করছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

সূত্র জানায়, এ শর্ত পূরণে মূলধন বাড়ানোর প্রক্রিয়া নির্বাচনে সংশ্নিষ্ট কোম্পানির ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কোনো কোম্পানিকে এমন কোনো শর্ত দেওয়া হবে না, যাতে তারা নতুন কোনো সংকটে পড়ে। প্রাথমিকভাবে দুই বছরের মধ্যে শর্ত পূরণের সময় দেওয়ার চিন্তা আছে। তবে এখনও তা চূড়ান্ত নয়।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা নেই, এমন কোম্পানিগুলোর মধ্যে বহুজাতিক কোম্পানি চারটি। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি সাতটি এবং বাকি ৫১টি বেসরকারি খাতের। বহুজাতিক কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার, বাটা সু এবং লিনডে বিডি। জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিক্যাল ডিভাইসেসের ৫০ শতাংশের মালিকানায় জাপানি কোম্পানি নিপরো। এর পরিশোধিত মূলধন ২২ কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সাত কোম্পানি হলো- ইস্টার্ন ল্যুব্রিকেন্টস, বিডি অটোকার, শ্যামপুর সুগার, জিলবাংলা সুগার, ন্যাশনাল টি, উসমানিয়া গ্লাস এবং ইস্টার্ন কেবলস।

পরিশোধিত মূলধন বর্তমানে ৫ কোটি টাকারও কম, এমন কোম্পানি ১৪টি। ৫ কোটি টাকার বেশি, কিন্তু ১০ কোটি টাকার কম এমন কোম্পানি ১৬টি। ১০ কোটি টাকা বা তার বেশি, কিন্তু ২০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনি কোম্পানি ২০টি। ২০ থেকে ২৭ কোটি টাকার মূলধনি কোম্পানি ১০টি।

বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজারে গভীরতা বাড়াতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মূলধন নূ্যনতম পর্যায়ে উন্নীত করার বিষয়ে একটি নির্দেশনা প্রদানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কী করা যায়, তার সুপারিশ করতে কমিশন গঠিত একটি কমিটি কাজও করছে। তাদের সুপারিশ পাওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, বর্তমান আইপিও প্রক্রিয়ায় ৫০ কোটি টাকার কম মূলধন নিয়ে কোনো কোম্পানির শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির সুযোগ নেই। কিন্তু বহু বছর আগে তালিকাভুক্ত অনেক কোম্পানি আছে, যেগুলোর পরিশোধিত মূলধন খুবই কম। বাজারে এদের লেনদেনযোগ্য শেয়ার খুবই কম এবং কোম্পানিগুলোর মৌলভিত্তির তুলনায় সেগুলোর বাজার মূল্য অনেক বেশি। এক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনতে মূলধন বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। যাদের মূলধন বাড়াতে হবে তারা যাতে পুনঃআইপিও প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি করে মূলধন বৃদ্ধি করতে চাইলে কমিশন উৎসাহ দেবে।

বিএসইসির সংশ্নিষ্ট এক কর্মকর্তা সমকালকে জানান, যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন খুব কম, সেগুলোর পুনঃআইপিওতে গিয়ে পুরো মূলধন ঘাটতি মেটানো সম্ভব নয়। এতে তার উদ্যোক্তা-পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের হার কমে গিয়ে তারা এ-সংক্রান্ত কমিশন নির্দেশনা লঙ্ঘন সংক্রান্ত নতুন সংকটে পড়বেন। এমনকি পর্ষদ হাতছাড়া হতে পারে। ফলে সকলের জন্য এ প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না।\হওই কর্মকর্তা বলেন, যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন এখন ৩০ কোটি টাকার কম রয়েছে, সেগুলো কোন প্রক্রিয়ায় এবং কত দিনের মধ্যে এ শর্ত পূরণ করতে পারবে, সে বিষয়ে তাদের লিখিত পরিকল্পনা চাওয়া হচ্ছে। পরিকল্পনা নেওয়ার পর কেস-টু-কেস সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।তালিকাভুক্ত কোম্পানি মূলত তিন প্রক্রিয়ায় মূলধন বাড়াতে পারে। এক. মুনাফায় থাকলে বা পুঞ্জীভূত মুনাফা থাকলে সবচেয়ে ভালো ও সহজ পন্থা হলো বোনাস শেয়ার (স্টক ডিভিডেন্ড) দেওয়া। দ্বিতীয়ত রাইট শেয়ার বিক্রি করা এবং তৃতীয়ত পুনঃআইপিও। এর বাইরে বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের বাইরে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন বাড়ানো যায়। অন্য যেসব কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার কম, সেগুলো হলো- সাভার রিফ্যাক্টরিজ, লিবরা, জুট স্পিনার্স, রেনউয়িক, নর্দান জুট, এমবি ফার্মা, সোনালী আঁশ, মুন্নু এগ্রো মেশিনারিজ, ফার্মা এইডস, বিডি অটোকার, জেমিনি, কেএন্ডকিউ, আজিজ পাইপস, এপেক্স ফুডস, আরামিট, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, দেশ গার্মেন্টস, দুলামিয়া কটন, বঙ্গজ, ইমাম বাটন, প্রাণ, এপেক্স স্পিনিং, জিকিউ বলপেন, বিডি ল্যাম্পস, রহিমটেক্স, রংপুর ফাউন্ড্রি, সমতা, আইএসএন, এপেক্স ফুটওয়্যার, মেঘনা পেট, লিগ্যাসি, ওরিয়ন ইনফিউশনস, কহিনূর, আলহাজ্বটেক্স, সিভিও, এইচআরটেক্স, সোনারগাঁওটেক্স ও মেঘনা সিমেন্ট, স্টাইল ক্রাফট, ফাইন ফুডস, ওয়াটা কেমিক্যাল, এপেক্স ট্যানারি, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, মেঘনা কনডেন্সড, প্রগ্রেসিভ লাইফ, আনলিমা ইয়ার্ন, শমরিতা, হাক্কানি, সিনো বাংলা, ।