ভরা মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেশে লবণ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সরবরাহ ঠিক রাখতে দেয়া হয় আমদানির অনুমতি। এ পরিপ্রেক্ষিতে কিছুটা বিলম্বে হলেও চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে এক লাখ টন ভোজ্যলবণ। তবে আমদানির পরও পণ্যটির বাজার স্থিতিশীলতায় ফিরছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, আমদানীকৃত লবণ নিয়ে এরই মধ্যে ভারত থেকে তিনটি বাল্ক ক্যারিয়ার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী ইস্টার্ন গার্ডেনিয়া ৩১ ডিসেম্বর, একই দেশের পতাকাবাহী সেইন্ট জন ৩ জানুয়ারি এবং বাংলাদেশের পতাকাবাহী বিএল আবদুল্লাহ ৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দরের আউটারে নোঙর করে। এর মধ্যে একটি বিএল আবদুল্লাহ থেকে প্রায় ১২ হাজার ৫০০ টন লবণ খালাস হয়েছে। এসব লবণ এরই মধ্যে দেশের বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। অপর দুটি জাহাজের খালাস সম্পন্ন হয়েছে ৬০ শতাংশ। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের কারণে গতকাল খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। আজ থেকে অধিকাংশ লবণই লাইটারেজে করে বন্দর থেকে খালাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন আমদানিকারকরা।
মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানীকৃত লবণের একটি বড় অংশ বাজারে সরবরাহ হলেও দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। দেশের বার্ষিক ও মাসভিত্তিক চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় লবণের বাজার অস্থির। এক লাখ টন লবণ আমদানির পরও দাম ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত উৎপাদন বাড়াতে না পারলে ফের আমদানি ছাড়া উপায় থাকবে না।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর নভেম্বরে লবণ উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়। দেশে চলতি মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ লাখ ২৮ হাজার টন। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টন। চলতি বছরের একই সময় উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৭৫ হাজার টনের কিছু বেশি। দেশে মাসভিত্তিক লবণের চাহিদা প্রায় দুই লাখ টন। উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় দ্রুত এক লাখ টন লবণ আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। ভারতে ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন জটিলতায় আমদানি প্রক্রিয়াও কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে।
বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি কবির আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমদানি হওয়া এক লাখ টন ভোজ্যলবণ দিয়ে সর্বোচ্চ ১৫ দিন চলবে। উৎপাদনে এমন মন্দা চলতে থাকলে লবণের সংকট অনিবার্য। প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোরও সুযোগ নেই। ফলে আমদানি চালান খালাস হওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন আমদানির অনুমতি দিতে হবে।