দেশে উৎপাদিত প্রসাধনীতে করের বোঝা, আমদানিতে ছাড়ভোজ্যতেল আমদানিতে কমলো ভ্যাটখেজুর আমদানিতে শুল্ক ও অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের সুপারিশঅনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল ও নিবন্ধন করবেন যেভাবেনবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেওয়া হচ্ছে ১০ বছরের কর অব্যাহতি
No icon

রপ্তানি ছাড়া কোনো সূচকই ভালো নেই

রপ্তানি ছাড়া অর্থনীতির আর কোনো সূচকই ভালো নেই। মূল্যস্ফীতি এখন ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। রপ্তানি বাড়লেও বাণিজ্যঘাটতি এখন গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বৈদেশিক মুদ্রা আয় কমে যাওয়ায় চলতি হিসাবের যে ঘাটতি, তা ও গত ৫০ বছরে দেখা যায়নি। এর প্রভাবে কেবল চলতি বছরেই টাকার অবমূল্যায়ন করতে হয়েছে ১০ শতাংশের বেশি।সব মিলিয়ে অর্থনীতি চাপ, অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির মধ্যে আছে। আবার বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল ও এলএনজির দাম বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও সংকটে পড়েছে। ফলে সাশ্রয়ের দিকে যেতে হচ্ছে সরকারকে। একই সঙ্গে জ্বালানি খাতের ভর্তুকি সরকারের ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিচ্ছে।বাংলাদেশ বিপদে পড়েছে আয় নিয়েও। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় সবচেয়ে কম রাজস্ব আদায় করে, এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশ প্রায় সবার নিচে। ফলে নিজস্ব সম্পদ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।

সবচেয়ে বড় সমস্যা মূল্যস্ফীতি

মূল্যস্ফীতি এখন বিশ্বেরই সবচেয়ে বড় সমস্যা। সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি এখন ৯ দশমিক ১ শতাংশ, যা ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তাত্ত্বিকভাবে দুই কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। যেমন চাহিদা বৃদ্ধি এবং উৎপাদন ব্যয় বাড়লে। কোভিডের ধাক্কা অনেকটা কেটে গেলে গত জানুয়ারি থেকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হতে শুরু করলে চাহিদা বৃদ্ধি পায়।কিন্তু সরবরাহ সংকট এবং উৎপাদন কম থাকায় সে সময় থেকেই বিশ্বে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকে। এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করলে জ্বালানিসংকট দেখা দেয়। এতে বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়। আবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে গমসহ খাদ্যশস্যের সরবরাহ কমে যায়। ফলে বিশ্বে একই সময়ে চাহিদাজনিত (ডিমান্ড পুল) ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির (কস্ট পুশ) কারণে মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে, যা ইতিহাসে খুব একটা দেখা যায়নি।গত জানুয়ারি থেকেই বাংলাদেশে অল্প অল্প করে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও শেষ তিন মাসে বৃদ্ধির গতি অনেকটাই বেশি। অর্থনীতিবিদেরা বলেন, মূল্যস্ফীতি ২ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে থাকলেই ভালো। ৭ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে থাকা মানেই বিপদ। এর চেয়ে বেশি হলে মহাবিপদ। অর্থাৎ বাংলাদেশ বিপৎসীমার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। মূল্যস্ফীতি মানেই জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি। বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের পক্ষে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে টিকে থাকা কঠিন।