বৈশ্বিক সংকটে রপ্তানি খাত চাঙা রাখতে রপ্তানিকারকদের সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দুটি তহবিল আছে। এ দুই তহবিল থেকে কোনো রপ্তানিকারক শিল্পগোষ্ঠী তাদের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ নেওয়ার পর রপ্তানি আয় দেশে না নিয়ে এলে ওই গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠান রপ্তানি সহায়ক প্রাক অর্থায়ন তহবিল থেকে আর ঋণ সুবিধা নিতে পারবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে। সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বরাবর নির্দেশনাটি পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বৈশ্বিক বিরূপ অর্থনৈতিক অবস্থার বিপরীতে রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সহনশীল করার পাশাপাশি দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখতে রপ্তানি সহায়ক প্রাক-অর্থায়ন তহবিল বা ইএফপিএফ পরিচালনার জন্য নীতিমালা করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, রপ্তানির জন্য ঋণ সুবিধা গ্রহণে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা একই গ্রুপভুক্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানির অনুকূলে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল থেকে ঋণ সুবিধা গ্রহণের পর ওই রপ্তানিকারক রপ্তানি মূল্য দেশে না এনে থাকলেও রপ্তানি সহায়ক প্রাক-অর্থায়ন তহবিল বা ইএফপিএফ থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ সুযোগ এখন থেকে আর থাকবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে রপ্তানিকারকেরা দ্রুত তাদের রপ্তানি আয় দেশে নিয়ে আসার ব্যাপারে আগ্রহী হবেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন।
জানা গেছে, নবগঠিত রপ্তানি সহায়ক তহবিল থেকে একজন রপ্তানিকারক সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারেন। ঋণ নিয়ে রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল সংগ্রহ করার জন্য এ নতুন তহবিল গঠন করা হয়। এতে সুদহার সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। এ তহবিল থেকে ঋণ দেওয়া হয় দেশি মুদ্রায়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ গঠিত এ তহবিলের অধীনে পরিচালিত হয় ইএফপিএফ।
এদিকে রপ্তানি খাতকে সহায়তা দিতে আগে থেকে রিজার্ভের অর্থে গঠন করা ইডিএফের তহবিলটির আকার ৭০০ কোটি ডলার। সেখান থেকে কাঁচামাল আমদানি করতে বিদেশি মুদ্রায় ঋণ নিতে পারেন রপ্তানিকারকেরা। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্তের কারণে এ তহবিল ছোট করে আনছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণ বিতরণেও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।