গতকাল শনিবার এক সতর্ক বার্তায় লরি লোগান বলেন, স্বল্পমেয়াদি নীতি সুদহার বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে বলে জানিয়েছেন ফেডারেল রিজার্ভ ডালাসের প্রেসিডেন্ট লরি লোগান। সম্প্রতি সে দেশের দীর্ঘমেয়াদি বন্ডের সুদহার যেভাবে কমতে শুরু করেছে, তাতে মূল্যস্ফীতির হার আবার বাড়তে পারে। সে জন্য স্বল্পমেয়াদি নীতি সুদহার আবার বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের আমেরিকান ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলনে লরি লোগান বলেন, আর্থিক খাতে যথাযথ কঠোরতা বজায় রাখা না হলে মূল্যস্ফীতির হার আবার বেড়ে যাবে, এমন ঝুঁকি আছে। গত কয়েক মাসে আর্থিক খাতে যে শিথিল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরেকবার নীতি সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে গেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার বাড়াতে শুরু করে। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে যায়। ফলে ফেডারেল রিজার্ভ ২০২২ সালের শুরু থেকে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আগ্রাসী হারে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। গত জুলাই থেকে অবশ্য সুদহার বাড়ায়নি তারা। এই সুদহার ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে স্থির আছে।
গত মাসে ফেডারেল রিজার্ভের নীতি প্রণেতারা ইঙ্গিত দেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসায় সুদহার বৃদ্ধির জমানা শেষ হওয়ার পথে; এমনকি ২০২৪ সালে তা হ্রাস করা হতে পারে। আর্থিক খাতও রীতিমতো বাজি ধরে, এ বছর সুদহার হ্রাস করা হতে পারে।
লরি লোগান বলেন, ‘ফেড এত দিন যেভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেছে, তার প্রভাব আমরা পেছনে ফেলে এসেছি। ১০ বছর মেয়াদি বন্ডের সুদহার গত অক্টোবরে ছিল ৫ শতাংশ; এখন তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।’ ফলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যে সফলতা এসেছিল, তা নষ্ট হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আর্থিক খাতে যথেষ্ট কঠোরতা থাকার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার ফেডের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২ শতাংশের কাছাকাছি চলে এসেছে বলে জানান লরি লোগান। তিনি বলেন, শ্রমবাজারে বেকারত্বের সমস্যা তেমন একটা না থাকলেও ভারসাম্য আসছে। তাঁর মতে, আর্থিক খাতে যথেষ্ট কঠোরতা না থাকলে মূল্যস্ফীতির হার হ্রাসের ধারা অব্যাহত থাকবে, সেই আশা করা যায় না।
লোগানের এই বক্তব্য উল্লেখযোগ্য এ কারণে যে তিনি হচ্ছেন ফেডের নীতি প্রণেতাদের মধ্যে অন্যতম, যিনি গত অক্টোবরে বলেছিলেন, দীর্ঘমেয়াদি বন্ডের সুদহার বৃদ্ধির কারণে ফেডের কিছু কাজ আপনা-আপনি হয়ে যাচ্ছে। সে জন্য সুদহার বৃদ্ধির প্রয়োজন নেই—তা যেখানে আছে, সেখানে রাখলেই চলবে। এই বাস্তবতায় লরি লোগান মনে করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যালান্স শিট বা স্থিতিপত্র সংকোচনের গতি কমানোর চিন্তা করার সময় এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সম্পদ বিক্রি করে দিতে পারে বা সেখান থেকে আসা লভ্যাংশ পুনর্বিনিয়োগ না করে মেয়াদোত্তীর্ণ হতে দেয়। এর মাধ্যমে বাজারের তারল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।