উল্কা গেমসের কর ফাঁকির ৫০ কোটি টাকা আদায়ে ব্র্যাক ব্যাংকে এনবিআরবাজেটের আকার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেইদশ পণ্যে রাজস্ব আহরণে ধসআমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের শুল্ককর যৌক্তিক হতে হবে
No icon

পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১৬ হাজার কোটি টাকা

রাজস্ব আহরণে দিন দিন লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে পড়ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এনবিআরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৪৮ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আহরিত হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে ১৬ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। এনবিআরের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।বাজেট বাস্তবায়নে অর্থায়নের সবচেয়ে বড় উৎস হচ্ছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বা রাজস্ব আদায়। করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে রাজস্ব আহরণ হোঁচট খেয়েছিল। সেই থেকে পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, কেউ বলতে পারছেন না। নতুন করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক সহিংসতা তৈরি হয়েছে, তা অর্থনীতির গতি আরও কমিয়ে দিয়েছে। এ সহিংসতা আরও দীর্ঘায়িত হলে দেশের অর্থনীতি চরম সংকটের মধ্যে পড়বে বলে মনে করে উন্নয়ন সহযোগীরা। রাজস্ব আদায়ে বিশাল ঘাটতির কারণে বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। এতে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া বাড়বে। তখন বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এতে বাধাগ্রস্ত হতে পারে বেসরকারি খাত। বাড়বে মূল্যস্ফীতি, যা প্রকারান্তরে মানুষের জীবনযাপনে দুর্ভোগ বয়ে আনবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এনবিআরকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করতে হবে। ফলে প্রতিদিন এনবিআরকে ১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে হবে। এতে সব মানুষের ওপর করের চাপ বাড়বে বলে মনে করে বিশ্লেষকরা।পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এই টার্গেট বাস্তবসম্মত নয়, বিশাল ঘাটতি থাকবে। রাজস্ব খাতে বড় সংস্কার করতে হবে। অভ্যন্তরীণ খাত থেকে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এই রাজস্ব প্রশাসন দিয়ে একটি বিশাল লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। এবার বড় ঘাটতিতে পড়বে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) আমদানি, ভ্যাট ও আয়কর- এই তিন খাতের মধ্যে কোনোটিতেই পাঁচ মাসের লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি ছিল আয়কর খাতে। আয়কর খাতে ঘাটতির পরিমাণ ৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে আয়কর আদায় হয়েছে ৩৯ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা। এ খাতে লক্ষ্য ছিল ৪৫ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা।

অন্যদিকে এই ৫ মাসে আমদানি শুল্ক খাতে ৫১ হাজার ৫১০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে। এ খাতে লক্ষ্য ছিল ৫৬ হাজার ৭৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের। ফলে এ খাতে ঘাটতি হয়েছে ৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট খাতে ৫ মাসে ৫ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই-নভেম্বর সময়ে এই খাতের জন্য লক্ষ্য ছিল ৪৭ হাজার ২২২ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৪১ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা।