মূলধনি মুনাফার করহার কমাল এনবিআরআয়কর রিটার্ন জমার সময় বাড়বে কিনা, জানাল এনবিআরচাল আমদানিতে আরও ২৩ শতাংশ করভার কমালো সরকারবছরে আয় সাড়ে ৩ লাখের নিচে হলে কর দিতে হবে নাচাল আমদানিতে শুধু ২% অগ্রিম আয়কর দিতে হবে
No icon

পূর্ণাঙ্গ অনলাইন প্রক্রিয়া চালু করতে যাচ্ছে আরজেএসসি

বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সে তুলনায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কম আসার জন্য ব্যবসা শুরু বা অনুমোদনের ধীরগতিকেই অন্যতম প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেন বিশ্লেষকরা। দীর্ঘসুত্রিতার পাশাপাশি নির্ধারিত নিবন্ধন ফির বাইরে প্রায়ই বাড়তি অর্থ খরচ করতে হয় উদ্যোক্তাদের। এই প্রেক্ষাপটে, অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ করা এবং সময় কমিয়ে আনার সাথেসাথে ব্যবসা নিবন্ধনের সময় হয়রানি রোধ করতে চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত আরজেএসসি। এজন্য আগামী জুলাই মাস থেকে পাবলিক-প্রাইভেট কোম্পানি, একক ব্যক্তি কোম্পানি (ওপিসি) এবং পার্টনারশিপ ফার্মের নিবন্ধনের সকল আবেদন প্রক্রিয়ায় অটোমেশন পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে।

আরজেএসসির কর্মকর্তারা বলছেন, এটি বাস্তবায়িত হলে কোম্পানি নিবন্ধন, নবায়ন, আয়কর রিটার্ন দাখিল, মালিকানা পরিবর্তন ও অবসায়নসহ সকল রকমের প্রক্রিয় ঘরে বসেই সম্পন্ন করা যাবে। দেশ-বিদেশে যেকোনো জায়গায় বসে এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন তারা। তবে জুলাই মাসে পূর্ণাঙ্গ ভাবে শুরু করার আগে শিঘ্রই পাইলট কার্যক্রম শুরু হবে।

আরজেএসসির একজন কর্মকর্তা জানান, একটি কোম্পানি নিবন্ধিত হওয়ার পরে, সেটির অনুমোদনের একটি প্রত্যয়িত কপি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবেদনকারীর ইমেলে চলে যাবে। এছাড়াও, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সরকারের অন্যান্য দপ্তর/ সংস্থার দ্বারা এই কোম্পানির অনুমোদন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আরজেএসসি থেকে পাঠানো হবে। অনুমোদিত কোম্পানির মূলধনসহ সমস্ত তথ্য সম্বলিত একটি ডেটাবেজ আরজেএসসির কাছে থাকবে, সেখানে প্রতিষ্ঠানটির আয়কর রিটার্নের তথ্য যোগ করা হবে। ওই কোম্পানির নামে কেউ ঋণের আবেদন করলে ব্যাংক বা আর্থিক সংস্থা কোম্পানির সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য আরজেএসসির থেকে নিতে পারবে। এজন্য একটি ডিজিটাল প্রক্রিয়া চালু করা হবে।

আরজেএসসির তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে মোট নিবন্ধিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ লাখ ৮৮ হাজার। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪ হাজার ৫১৬টি নতুন কোম্পানি নিবন্ধন নিয়েছে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে নিয়েছে ৮ হাজার ১৬১টি এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ হাজার ২১৮টি কোম্পানি নিবন্ধন নেয়। উদ্যোক্তাদের নতুন বিনিয়োগে উত্সাহিত করতে আরজেএসসি ইতোমধ্যে একটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে। যার আওতায়, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পাবলিক বা প্রাইভেট কোম্পানিতে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের জন্য নিবন্ধন ফি অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়াও আগে নতুন কোম্পানি নিবন্ধনের জন্য আগে আরজেএসসির অফিসে এসে পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডারদের নতুন কোম্পানির আবেদনপত্রসহ বিভিন্ন কাগজে সই করতে হতো। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেটি বাতিল করে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে অনলাইনে স্বাক্ষর প্রদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে নতুন কোম্পানির অনুমোদন নিতে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুবিধা তৈরি করেছে আরজেএসসি। আগে একটি কোম্পানি নিবন্ধন করার পরে, সংশ্লিষ্টদের কোম্পানির মূল সনদ পেতে বারবার আরজেএসসি অফিসে যেতে হতো। তবে কর্তৃপক্ষটি এখন নামমাত্র ফি দিয়ে এই সার্টিফিকেটগুলো দ্রুত ইস্যু করার জন্য একটি অনলাইন ব্যবস্থা চালু করেছে।

ডিজিটাল পদ্ধতিতে কোম্পানি নিবন্ধনের জন্য ২০১১ সালে প্রথম উদ্যোগ নেয় আরজেএসসি। শুরুতে শুধু কোম্পানির নামের ক্লিয়ারেন্স নিত এই পদ্ধতিতে। এরপর আরও কয়েকটি প্রক্রিয়া চালু করলেও সেগুলোর কার্যকরীতা ছিল সীমিত।