এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে ভারত-চীনের বাণিজ্য পর্যালোচনা করতে এক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হবে। আশা করা হচ্ছে, তারা ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। ভারতের সরবরাহ ব্যবস্থায় চীনের বড় ভূমিকা আছে। সে কারণে ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই নির্ভরশীলতা কমাতে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। কোভিড-১৯ মহামারি ও ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে ভারতের সরবরাহ ব্যবস্থা ও উৎপাদন নেটওয়ার্কের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। সে কারণে সরবরাহ ব্যবস্থার বহুমুখীকরণ জরুরি।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ হবে চীনের ওপর ভারতের নির্ভরশীলতা বিশ্লেষণ ও তার অন্তর্নিহিত কারণ খুঁজে বের করা। এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে ভারতের সরবরাহ ব্যবস্থা কেমন, তার তুলনামূলক বিশ্লেষণও করবে তারা। এ ছাড়া যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে ভারত তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে এবং যেসব পণ্যের চীনে বড় বাজার আছে, তা-ও খতিয়ে দেখবে সেই কমিটি। রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই তা করা হবে। এ ছাড়া প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত কোথায় কোথায় পিছিয়ে আছে এবং সেই ঘাটতি পূরণে কী পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রতিযোগিতামূলক পণ্য তৈরিতে দেশীয় মানবসম্পদ কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। সবচেয়ে ভালোভাবে তা করার কী উপায়, সেই সুপারিশ দেবে পরামর্শক কমিটি।
নীতি আয়োগের তথ্যানুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতের সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি ছিল চীনের সঙ্গে। গত অর্থবছরে দেশটি বিশ্বে ৪৫০ বিলিয়ন বা ৪৫ হাজার কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে; একই সময়ে তারা আমদানি করেছে ৭১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ ওই বছরে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। এর ৩২ শতাংশ বা ৮ হাজার ৩১০ কোটি ডলারের ঘাটতি শুধু চীনের সঙ্গে।
২০২১-২২ অর্থবছরে ভারত চীন থেকে মূলধনি পণ্য আমদানি করেছে ৪৭ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের; অন্তর্বর্তীকালীন পণ্য আমদানি করেছে ৩ হাজার কোটি ডলারের; ভোগ্য পণ্য ৯৪০ কোটি ডলারের; কাঁচামাল ১০০ কোটি ডলারের। অন্যদিকে ভারত চীনে অন্তর্বর্তীকালীন পণ্য রপ্তানি করেছে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলারের; কাঁচামাল রপ্তানি করেছে ৬০০ কোটি ডলারের; ভোগ্য পণ্য ৩৪০ কোটি ডলারের; মূলধনি পণ্য ২৪০ কোটি ডলারের।