ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ঢাকাসহ সব বিভাগীয় শহর ও কমিশনারেট কার্যালয়ে উদযাপন হচ্ছে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করতে যথাযথ ভ্যাট প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) ভ্যাট দিবস এবং একইসঙ্গে ১০-১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ উদযাপনে নানা কর্মসূচি নিয়েছে এনবিআর। ভ্যাট বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও চালান সংগ্রহে উৎসাহ দিতে এবারের দিবসটি উদযাপন করছে প্রতিষ্ঠানটি।এনবিআর জানায়, চলতি বছরে ভ্যাট সিস্টেমকে সামগ্রিকভাবে অনলাইন ভিত্তিক করে ঘরে বসে সব ভ্যাট সেবা প্রদানের জন্য একটি রোবাস্ট ভ্যাট সিস্টেম নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে সারা দেশের ছাত্র-জনতা অংশ নিয়ে যেমন গণতান্ত্রিক মুক্তি নিশ্চিত করেছে, তেমনি দেশের জনগণ একই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অর্থনৈতিক মুক্তিও নিশ্চিত করবে। জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ পালন উপলক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে করদাতাদের নিবন্ধন, রিটার্ন, ই-পেমেন্ট, ক্রয়-বিক্রয়ের হিসাব সংরক্ষণ ও চালানপত্র ইস্যু ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরাসরি সার্কেল, বিভাগ ও কমিশনারেট থেকে বিশেষ সেবা দেওয়া হবে। এ বছরে ১০ ডিসেম্বর নবমবারের মতো দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।
এর আগে প্রতি বছর ১০ জুলাই জাতীয় ভ্যাট দিবস পালিত হতো। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে মূসক প্রবর্তিত হওয়ার পর এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ২০১১ সাল থেকে দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। আর ২০১৩ সাল থেকে দিবসের পাশাপাশি ১০-১৫ ডিসেম্বর ভ্যাট সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। এবারের ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে । এ স্লোগানে মূলত ভ্যাট প্রদানে জনগণের ব্যাপকভিত্তিক অংশগ্রহণ ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের অবদানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।ভ্যাট দিবস উপলক্ষ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, আমরা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল, চিনি, পেঁয়াজ, আলু, ডিম, ভোজ্যতেল ও খেজুরের ওপর শুল্ক-কর প্রত্যাহার করেছি। যার নেতিবাচক প্রভাব কর আদায়ে পড়েছে। যদিও এটা জনস্বার্থে করতে হয়েছে। আমরা আশা করছি পরিস্থিতির উন্নতি হবে। উন্নতি হলে ভ্যাট আদায় বৃদ্ধি পাবে। ভ্যাট নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। এটা অত্যন্ত কম। আমি সম্মানিত করদাতাদের ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য আহ্বান জানাব। কারণ এখন ঘরে বসেই ভ্যাট নিবন্ধন, ভ্যাট পরিশোধ ও সহজেই ভ্যাট রিটার্ন দেওয়া যাবে। আর অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন জমা দিলে অফিসে হার্ডকপি জমা দেওয়া লাগবে না। আমাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে করনেট বাড়াতে হবে। এ কারণে যারা ভ্যাট রিটার্ন দেন তাদের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হবে, তাদের নেটের আওতায় আনা হবে। আমরা ডোর টু ডোর যাব। আমরা যদি ভ্যাট নেটের পরিধি বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে বাকি যে ছয় মাস আমাদের হাতে রয়েছে, ওই সময়ে রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করতে পারব। সংকট থেকে উত্তরণে আমাদের হাতে আর কোনো বিকল্প নেই।দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ সকাল ১০টায় আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে সেমিনার ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে এবং অর্থসচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদারের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।