ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত: ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ, আন্দোলনের হুমকি৪৩ পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বাড়ছেবায়োমেট্রিক সিমবিহীন করদাতাদের সুখবর দিল এনবিআরসিগারেটে কার্যকর করারোপ না করায় রাজস্ব হারিয়েছে সরকারআরও এক মাস বাড়ল রিটার্ন জমার সময়
No icon

৪৩ পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বাড়ছে

মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের আওতা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কম ভ্যাট রয়েছে এমন অন্তত ৪৩ ধরনের পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ আরোপের প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি। এসব খাতে বর্তমানে ৫ থেকে ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট রয়েছে। ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলে আগামী শনিবার অধ্যাদেশ আকারে জারি হতে পারে। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।রাজস্ব খাতে সংস্কারের পদক্ষেপ হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পূরণ করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়ে ভ্যাট বাড়ালে সাধারণ ভোক্তার ওপর নতুন করে ব্যয়ের চাপ তৈরি হতে পারে।চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাকি ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) আগের প্রাক্কলনের তুলনায় অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সে জন্য হোটেল, রেস্তোরাঁ ও পোশাকের ওপর ভ্যাটের হার বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সাধারণ মানের এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) রেস্তোরাঁয় খাওয়ার জন্য ভোক্তাকে ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়, যা বেড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ হতে পারে। নন-এসি হোটেলে থাকার ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় ব্র্যান্ডের পোশাকের ওপর ভ্যাট দ্বিগুণ হতে পারে। বর্তমানে এ খাতে ভ্যাট রয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ। শুধু ব্র্যান্ডেড নয়, সাধারণ মানের যে কোনো পোশাক কিনলেই ক্রেতাকে এ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হতে পারে।

ওষুধ ব্যবসায়ও ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের। এ ছাড়া যেসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কেনার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ট্রেড ভ্যাট কার্যকর আছে, তা সাড়ে ৭ শতাংশে উন্নীত করা হতে পারে।এ ছাড়া রাজস্ব বোর্ড থেকে সাবান, ডিটারজেন্ট, পেইন্ট, সুপারি ও আরও সাতটি পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে।অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ ও সার্কভুক্ত দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ ভ্রমণে বিমানের টিকিটের খরচও বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে রাজস্ব বোর্ড। স্থানীয়ভাবে বর্তমানে প্রতিটি বিমান টিকিটের ক্ষেত্রে আবগারি শুল্ক ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হচ্ছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোতে ৫০০ টাকা থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে এক হাজার টাকা এবং অন্যান্য দেশে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে তিন হাজার থেকে বাড়িয়ে চার হাজার টাকা করা হচ্ছে। পাশাপাশি তামাক পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য বাড়ানো হতে পারে।এনবিআরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কর আদায়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নতুন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের তাড়া আছে। সে জন্য বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন পেলে আগামী শনিবার অধ্যাদেশ জারি করে নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হতে পারে। এ ছাড়া আগামী অর্থবছর থেকেই প্রায় সব পণ্য ও সেবার ওপর একক ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট কার্যকর করতে চায় এনবিআর।