আমদানি-রপ্তানির আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে অর্থপাচার ঠেকাতে শুল্ক সংশ্লিষ্ট অটোমেশন (স্বয়ংক্রিয়) প্রযুক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।রপ্তানি সংশ্লিষ্ট পক্ষ যেমন- ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার, শিপিং এজেন্ট, এনবিআরের কাস্টমস শাখার এক্সপোর্ট জেনারেল ম্যানিফেস্ট (ইজিএম) ডিপার্টমেন্ট প্রভৃতির কোন পক্ষকে কী কাজ করতে হবে, কত সময়ের মধ্যে করতে হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।সম্প্রতি এনবিআরের জারি করা আদেশ রোববার (১৫ অক্টোবর) থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আমদানি-রপ্তানির আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে দেশ থেকে অর্থপাচার হচ্ছে বলে বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে। চলতি বছর সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, কাতার, সৌদি আরব, নাইজেরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের পোশাক। অথচ শত শত কোটি টাকার এসব রপ্তানি আয়ের দেশে আসেনি একটি টাকাও। পাচার করতে অপরাধীরা আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির। এখন পর্যন্ত চক্রে জড়িত ৩৩টি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের হদিস মিলেছে। এসব প্রতিষ্ঠান ৮৩০ কোটি টাকা পাচার করেছে বলে জানিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এনবিআরের আদেশে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো এ নিয়মের ব্যত্যয় করলে বিদ্যমান কাস্টমস আইনানুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এনবিআরের সূত্র জানায়, এ ক্ষেত্রে প্রতিটি চালানের জন্য অনিয়মকারী পক্ষকে প্রতিবার সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করার বিধান রয়েছে।আদেশে আরও বলা হয়, রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজ করা, মানি লন্ডারিং প্রতিহত করা, রপ্তানি প্রক্রিয়ার সময় কমানো এবং নির্ভরযোগ্য রপ্তানি পরিসংখ্যান নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন কাস্টম হাউজ ও কাস্টমস স্টেশনে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে (আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার) ইমপোর্ট জেনারেল ম্যানিফেস্ট বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ইজিএমের কাজ সঠিকভাবে পালন করার জন্য ওই স্কোপ অব ওয়ার্ক সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।এনবিআর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সফটওয়্যার পুরোপুরি ব্যবহারের ফলে রপ্তানির সঠিক হিসাব পাওয়া সহজ হবে। ভুয়া রপ্তানি কমার সুযোগ তৈরি হবে। এ ব্যবস্থা পুরোদমে বাস্তবায়ন হওয়ার পর ভুয়া রপ্তানি বা রপ্তানি সংশ্লিষ্ট গড়মিল ৯০ শতাংশ ঠিক হয়ে যাবে।