মেট্রোরেলের ভাড়ায় বসছে ১৫% ভ্যাটকৃষি ও নিত্যপণ্যে শুল্ক না বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকরছাড় কমাতে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীবাড়তি রাজস্ব সংগ্রহে করছাড় ও অব্যাহতি কিছুটা কমাবে এনবিআরইআরডি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী বাড়ছে দেশি-বিদেশি ঋণের ঝুঁকি
No icon

স্থানীয় পর্যায়ে ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজন চায় বিএআইএমএ

অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) খাতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কমপক্ষে ৬০ শতাংশ স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজনের শর্ত আরোপ করেছে। তবে এ খাতের ব্যবসায়িক সংগঠন বাংলাদেশ এপিআই ও ইন্টারমিডিয়ারিস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএআইএমএ) স্থানীয় পর্যায়ে ২০ শতাংশ মূল্য সংযোজনের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে। আর এ বিষয়ে মতামত জানতে চেয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগকে সাতদিনের মধ্যে এ বিষয়ে মতামত জানাতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদের চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশে ও বিদেশে ওষুধের কাঁচামালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই এ খাতে রফতানি আয়ে ভালো সুযোগ থাকায় ২০১৮ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জাতীয় এপিআই ও ল্যাবরেটরি বিকারক (রি-এজেন্টস) উৎপাদন ও রফতানি নীতি জারি করে। নীতিমালায় দেশে উৎপাদিত ওষুধের কাঁচামাল রফতানিতে ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে ন্যূনতম ২০ শতাংশ স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন করার কথা বলা হয়েছে। আর ২০২৬ সালের পর সরকার মূল্য সংযোজনের হার রিভিউ করতে পারবে। তবে ব্যবসায়ীদের ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য কমপক্ষে ৬০ শতাংশ স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজনের শর্ত দেয় এনবিআর।

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, এপিআই নীতি অনুযায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে আগামী পাঁচ বছর দেশে নিবন্ধিত কোম্পানিগুলো উৎপাদন পর্যায়ে শর্তহীনভাবে করপোরেট ট্যাক্স হলিডে সুবিধা পাবে। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরের পর শুধু যোগ্যতার ভিত্তিতে এ সুবিধা প্রদান করা হবে। এপিআই শিল্পকে ২০৩২ সাল পর্যন্ত অগ্রিম আয়কর ও উেস কর থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু এনবিআর এখনো অগ্রিম আয়কর ও উেস কর নিয়ে কোনো এসআরও জারি করেনি।

দেশীয় এপিআই ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদকদের কারখানায় মান নিরীক্ষা নিয়ন্ত্রণের জন্য ঔষধ প্রশাসন এবং এনবিআরের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ২০২২ সালের মধ্যে এপিআই ও ল্যাবরেটরি বিকারক উৎপাদন কারখানায় গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) নিশ্চিত করে লাইসেন্স দেবে। কিন্তু এখানে কারখানার মান ও জিএমপি পরীক্ষায় ওষুধ প্রশাসনের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা থাকলেও এনবিআরের নেই। তাই শুধু ঔষধ প্রশাসনের লাইসেন্স ও কাগজপত্র যাচাই করে সার্টিফিকেট দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিএআইএমএ।

এছাড়া এনবিআর এপিআই খাতে শুল্কমুক্ত পণ্য ছাড়করণের সুবিধা দিয়েছে। তবে শুল্ক কর্তৃপক্ষ সময়মতো পণ্য খালাস না করায় পোর্ট ড্যামেজের কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। এতে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাতে হচ্ছে। আর এ বিষয়গুলো নিয়ে মতামত জানতে চেয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের মে মাসে এপিআই শিল্পে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন ও পণ্য সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা পাঁচ বছর বাড়িয়েছে। অর্থাত্ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সুবিধা পাবে এপিআই শিল্প।

জানা যায়, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও) অনুন্নত দেশের জন্য ২০৩২ সাল পর্যন্ত এপিআই শিল্পকে বিভিন্ন রেয়াত দিয়েছে। এর সুফল গ্রহণের জন্য সরকার এপিআই নীতি করেছে। আর এ সুযোগে গত চার বছরে ৪২ কোটি টাকার ওষুধের কাঁচামাল রফতানি হয়েছে। বিএআইএমএ জানায়, বিশ্বব্যাপী এপিআইয়ের বাজার প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলারের। ডব্লিউটিওর নীতির কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এ বাজারের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ধরতে পারবে। এছাড়া সরকার মুন্সীগঞ্জে এপিআই শিল্প পার্ক স্থাপন করেছে। এ পার্কে ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে।