ফাঁকি রোধে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ভ্যাট চালান ৫ বছর সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই সঙ্গে ভ্যাট চালান ছাড়া পণ্যবাহী পরিবহন রাস্তায় পাওয়া গেলে তা আটক করবে ভ্যাট কর্মকর্তারা ভ্যাট ফাঁকি প্রতিরোধ বুধবার এনবিআর থেকে এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে এনবিআর সূত্র জানায়, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের কারখানা থেকে পণ্যবাহী পরিবহন বের হওয়ার সময় ভ্যাট চালান দেওয়া হয় না। ভ্যাট ফাঁকি দিতে এসব প্রতিষ্ঠান ভ্যাট চালান ছাড়াই ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দেয়। এর মাধ্যমে বছরের পর বছরে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি হয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান চালান ইস্যু করলেও তা সংরক্ষণ করে না। ফলে নিরীক্ষার সময় প্রতিষ্ঠানগুলো চালান দেখাতে পারে না। তাই এবার ভ্যাট ফাঁকি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর নির্দেশনায় বলা হয়,পণ্য বা সেবা সরবরাহের সময় প্রতিষ্ঠানকে মূসক চালান ইস্যু করতে হবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের ক্ষেত্রে এক শাখা হতে অন্য শাখায় পণ্য স্থানান্তরের সময় চালান ইস্যু করতে হবে। মূল্য সংযোজনকর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর ৫১ ধারা অনুযায়ী ক্রেতাকে কর চালানপত্র নামে চালানপত্র দিতে হবে। এছাড়া বিধিমালা অনুযায়ী চালানপত্র (মূসক ফরম ৬.৫) ইস্যুর বিধান রয়েছে। কর চালানপত্রে যে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছে পণ্য বিক্রি করা হবে সে নিবন্ধিত ব্যক্তির নাম,বিআইএন নাম্বার, প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা, তারিখ,পণ্যের বর্ণনাসহ বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। যে প্রতিষ্ঠান পণ্য বিক্রি করবে সে প্রতিষ্ঠানকে একই রকম দুই কপি কর চালানপত্র ইস্যু করতে হবে। এর মধ্যে মূল চালানটি ক্রেতাকে প্রদান এবং অপর চালান ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে কমপক্ষে ৫ বছর সংরক্ষণ করতে হবে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়,যেসব প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয়ভাবে ভ্যাট নিবন্ধিত অর্থাৎ একই কোম্পানির অন্য প্রতিষ্ঠান তাদের এক শাখা হতে অন্য শাখায় পণ্য স্থানান্তরের সময় চালানপত্র (মূসক ফরম ৬.৫ বা কেন্দ্রীয় নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের পণ্য স্থানান্তর চালানপত্র) ইস্যু করতে হবে। কারখানা থেকে পণ্যপরিবহনে কর চালানপত্র ও চালানপত্র পরিবহনে রাখতে হবে। পরিবহনে এসব চালান না থাকলে মূসক ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকির সুযোগ তৈরি এবং করদাতা ও মূসক কর্মকর্তাদের মধ্যে জটিলতা সৃষ্টি হবে। চালান না থাকলে মূসক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভ্যাট গোয়েন্দা, ভ্যাট কমিশনারেট, বন্ড কমিশনারেট প্রায় সময় পরিবহন আটক করে। এতে দেখা যায়, শুধুমাত্র বিক্রির মেমো ছাড়া কোন প্রকার কর চালানপত্র নেই। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান এবং ক্রেতা উভয় ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে। ফাঁকি রোধে তাই এনবিআর এ নির্দেশনা জারি করেছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন।