চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রাজস্ব আদায় না বাড়ার পেছনে ভ্যাটকে দায়ী করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) কারণে রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। কথা ছিল, জুলাইয়ে ভ্যাট আদায়ে ইলেকট্রনিক মেশিন বসানো হবে; কিন্তু তা সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে আদায় বাড়ছে না। সময়মতো মেশিন চালু না হওয়ায় সামগ্রিকভাবে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মন্ত্রী আরও বলেন, ডিসেম্বরে ইলেকট্রনিক মেশিন বসবে। তার পর থেকে আদায় বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে ক্রয় ও অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরু হয় ১ জুলাই থেকে। মূলত এ আইনকে নির্ভর করে চলতি অর্থবছরে তিন লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এনবিআরের সাময়িক হিসাবমতে, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়। একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কারণ কী? জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, রপ্তানি কমবে না, যত দিন এ সরকার ক্ষমতায় থাকবে। তিনি বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলছে। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে। ফলে দেশের রপ্তানিতে কিছুটা ধাক্কা লেগেছে। খুব শিগগির তা কেটে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রপ্তানি আয় নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই- উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ যৌথভাবে বলেছে, বাংলাদেশের জন্য ভয়ের কিছু নেই। কারণ, আমাদের জিডিপির তুলনায় বিদেশি ঋণের পরিমাণ কম। তারা আরও বলেছেন, বাংলাদেশের সবকিছু ইতিবাচক রয়েছে। কাজেই রপ্তানি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
মুস্তফা কামাল আরও বলেন, দেশের ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদনমুখী খাত খুব শক্তিশালী। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ বলেছে, উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখতে হলে উৎপাদনমুখী খাতকে নীতি-সহায়তা দিতে হবে। বর্তমান সরকার এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে এবং রপ্তানি আয় বাড়াতে নীতি-সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে।
রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ইলেকট্রনিক মেশিন না বসানোর কারণে রাজস্ব আদায় ক্ষতি হয়েছে। এনবিআরকে বিশ্বাস করেছিলাম; কিন্তু কথা রাখতে পারেনি তারা। তবে ডিসেম্বরে মেশিন বসবে। এর পর থেকে রাজস্ব আয় বাড়বে। এখন রাজস্ব আয় খারাপ হলেও অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
জনতা ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আর কে ব্যাংক: বৈধ উপায়ে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে সরকারি মালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আর কে ব্যাংক যৌথভাবে কাজ করবে। বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আবদুল্লাহ আলির নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এ কথা জানায়।
ক্রয় কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশ। সেখানে বসবাসরত প্রবাসীরা অবৈধ উপায়ে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠান বলে অভিযোগ রয়েছে। এর কারণ, সেখান থেকে সহজে রেমিট্যান্স পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমিরাতে জনতা ব্যাংকের শাখা থাকলেও প্রবাসীদের প্রয়োজনমতো সেবা দিতে পারছে না। সে জন্য আর কে ব্যাংকের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। পার্টনারশিপের মাধ্যমে এ কাজ করা হবে।