২০২০-২১ অর্থবছরে ভ্যাট গোয়েন্দারা ২৩৩টি ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ তদন্ত করেছেন। তদন্তে এক হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি ধরা পড়েছে। এ তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আদায় হয়েছে ১৪৩ কোটি টাকা। ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ক্রেতা বা গ্রাহকরা পরিশোধ করলেও বিপুল পরিমাণ মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা পড়ছে না। সংগ্রহ করা ভ্যাট নানা কৌশলে সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে ফাঁকি দিচ্ছে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান জানান, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরুর বছরে করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারণে বড় ধরনের কোনো অভিযান চালানো হয়নি। পরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে চালু হওয়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনা অনুসারে ভ্যাট ফাঁকি রোধে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়। এতে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণ মিলেছে। ভ্যাট গোয়েন্দাদের তদন্তে দেখা গেছে, প্রধানত পাঁচ উপায়ে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কিছু নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান তাদের কেনা উপকরণ ও উৎপাদিত পণ্যের তথ্য গোপন করছে।
অনেক কোম্পানি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে তথ্য গোপন করে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান বিক্রির ওপর ভ্যাট দিলেও ব্যয়ের ওপর উৎসে ভ্যাট কাটে না। এতে অনেক রাজস্ব ফাঁকি হয়। এ ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠান ভ্যাটের নিবন্ধন নিচ্ছে না; কিন্তু ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট সংগ্রহ করছে। আবার অনেক নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের থেকে সংগ্রহ করা ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমাই দিচ্ছে না। অনেকে ভ্যাট চালানও ইস্যু করে না।ভ্যাট গোয়েন্দারা দুইভাবে এ তদন্ত করেছেন। এর একটি হচ্ছে- বিভিন্ন কোম্পানির হিসাবের ওপর অডিট। গত অর্থবছরে ১৪১টি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের অডিট পরিচালনা করেছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এতে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানগুলো এক হাজার ৪০৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। অডিটে ভ্যাট ফাঁকি উদ্ঘাটিত হওয়ার পর অনেক কোম্পানি স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজস্ব জমা দিয়েছে।এ ছাড়া ভ্যাট আইনের ৮৩ ধারা অনুযায়ী ৯২টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেন গোয়েন্দারা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এসব অভিযান পরিচালনা করে ধরা পড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ।