৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক ও স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান ল্যাবএইড লিমিটেড। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সেবা গ্রহণের বিপরীতে ওই ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের গোয়েন্দা অডিটে এসব তথ্য উঠে এসেছে। যদিও ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি মেনে নিয়ে কয়েকটি ধাপে ইতোমধ্যে প্রকৃত ভ্যাট ও সুদবাবদ ৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে ল্যাবএইড। কিন্তু এখনও ফাঁকিকৃত ভ্যাটের ৯৩ লাখ ১ হাজার ৮১ টাকা পরিশোধ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। যে কারণে ল্যাবএইড লিমিটেডে সম্প্রতি আবারও চিঠি দিয়েছে এনবিআরের ঢাকা (পশ্চিম) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিস। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ল্যাবএইডকে দেওয়া চিঠি ও এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ল্যাবএইড লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি পর্যায়ে ডায়াগনস্টিক ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে থাকে। ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত নিরীক্ষা মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটির উৎসে মূসক বা ভ্যাট পরিশোধ সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে এনবিআরের সিআইসি’র একটি বিশেষ টিম। ওই সময়ে উৎসে মূসক বা ভ্যাট ও বাড়ি ভাড়ার উপর প্রযোজ্য ভ্যাট বাবদ অপরিশোধিত রাজস্বের বিষয়টি নিশ্চিত হয় এনবিআরের টিম।
নথিপত্র পর্যালোচনায় টিম দেখতে পায়, প্রতিষ্ঠানটি ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর মেয়াদে বিভিন্ন সেবা গ্রহণের বিপরীতে মোট ৬ কোটি ৮০ হাজার ৮০৩ টাকার উৎসে ভ্যাট প্রযোজ্য হলে মূসকবাবদ ১ কোটি ৯৩ লাখ ১ হাজার ৬৯৬ টাকা জমা দিয়েছে ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে নিরীক্ষা মেয়াদে অপরিশোধিত উৎসে মূসক বা ভ্যাটের পরিমাণ ৪ কোটি ৭ লাখ ৭৯ হাজার ১০৭ টাকা। এর মধ্যে ২০১৬-১৭ সময়কালে বিভিন্ন সেবা গ্রহণের বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে মূসকবাবদ ৭৭ লাখ ৫০ হাজার ২৪৯ টাকা, একইভাবে ২০১৭-১৮ সালে ৩ কোটি ৩০ লাখ ২৮ হাজার ৮৫৮ টাকার ভ্যাট রয়েছে। যা নথিপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য অনুসারে কর ফাঁকির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
সূত্র জানায়, কর ফাঁকির অভিযোগ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় প্রকৃত ভ্যাটের সঙ্গে মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ এর ৩৭ ধারার ৩ উপধারা অনুযায়ী দুই শতাংশ সুদ বিবেচনায় ২ কোটি ৬৬ লাখ ৫৭ হাজার ২০১ টাকা বাড়তি ভ্যাট পরিশোধের বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার ৩০৮ টাকা পরিশোধ করতে হবে। যদিও রাজস্ব ফাঁকির কথা স্বীকার করে ওই টাকা জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ল্যাবএইড লিমিটেড। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে ফাঁকিকৃত ৪ কোটি ৭ লাখ ৭৯ হাজার ১০৭ টাকা এবং সুদের ১ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ১২০ টাকা পরিশোধ করা হলেও এখনও ৯৩ লাখ ১ হাজার ৮১ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।