অনলাইনে ৯৬ ঘণ্টা ভ্যাট কার্যক্রম বন্ধ থাকবেরমজানে ভোজ্যতেলের দাম কমাতে কর অব্যাহতিখোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানের শুল্ক বাকি ১৮ হাজার কোটি টাকা, ৩৭ চিঠি দিয়েও ব্যর্থ এনবিআরভ্যাটের একক রেট করতে পারলে ফাঁকি কমে যাবেজুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনায় জাতীয় ভ্যাট দিবস উদযাপন
No icon

ব্যক্তি আয়কর ৬৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো সম্ভব

আয়করযোগ্য হলেও অনেক মানুষ নিয়মিত কর দেন না। রাজস্ব বাড়াতে আয়কর আদায়ে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। ব্যক্তি পর্যায় থেকে রাজস্ব আদায় বছরে আরও ৬৫ হাজার কোটি টাকা বাড়ানো সম্ভব। এ ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদি কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। এই অর্থ আদায় করা গেলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুসারে কর-জিডিপি অনুপাত দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব হবে।গতকাল বুধবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ব্যক্তি আয়কর, করপোরেট কর এবং ভ্যাটের মাধ্যমে রাজস্ব সংগ্রহ বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই পরিচালক বজলুল হক খন্দকার।রাজধানীর বনানীতে পিআরআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কিত বিভিন্ন দিক ব্যাখ্যা করেন পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার, নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এবং পরিচালক আবদুর রাজ্জাক।ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিভিন্ন খাতে দেওয়া কর ছাড় কমিয়ে আনা হলে আগামী অর্থবছরেই অতিরিক্ত ৩০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব। স্বল্প মেয়াদে এই বাড়তি অর্থ আদায়ের পাশাপাশি কর কাঠামোতে সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে। বাড়তি রাজস্ব আদায় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন দরকার। একই সঙ্গে কর প্রশাসনে দুর্নীতি কমানো, অটোমেশন, করছাড় তুলে নেওয়া ও ২০১২ সালের মূল ভ্যাট আইনে ফিরে যাওয়া প্রয়োজন। ওই আইনে ভ্যাট ১৫ শতাংশ রাখার কথা বলা হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কর প্রশাসন দুর্নীতিমুক্ত করা, কর আদায় ব্যবস্থা অটোমেটেড বা স্বয়ংক্রিয় করাসহ বিভিন্ন সংস্কারে হাত দেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। নতুন সরকারের প্রথম দুই-তিন বছরই সাহসী সংস্কার করা সম্ভব। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সেটা আর সম্ভব হয় না। আগামী বাজেটে অর্থমন্ত্রী এ বিষয়ে সুস্পষ্ট পদক্ষেপের কথা বলবেন বলে আশা করেন তিনি।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, নতুন সরকার এসেছে। এখন রাজস্ব খাত সংস্কারের সময়। বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার সময় এখনই। সামনে বাজেট আসছে। আগামী বাজেটে সংস্কারের প্রতিফলন থাকা উচিত।তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আইএমএফের একটি দল বাংলাদেশ ঘুরে গেছে। তারা বলেছে কোথায় কীভাবে করছাড় কমাতে হবে। কিছু পদক্ষেপ আগামী বাজেটে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।আহসান এইচ মনসুরের মতে, শুধু করছাড় কমিয়ে আগামী অর্থবছরে বাড়তি ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। করছাড় না কমিয়ে কর-জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত করা সম্ভব নয়। ব্রিটিশ আমলের ব্যবস্থাপনা দিয়ে তা হবে না। এ জন্য রাজস্ব খাতের মৌলিক সংস্কার লাগবে। কাঙ্ক্ষিত হারে কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে আগামী তিন বছরে রাজস্ব খাতেও বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন।ড. জাইদী সাত্তার বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ শুল্ক আরোপের সংস্কৃতি আছে। উচ্চ শুল্কহার বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করছে। সংরক্ষণমূলক নীতির কারণে দেশের রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য আসছে না। উদ্যোক্তারা যখন দেখেন দেশি বাজারে বিক্রি করলেই বেশি মুনাফা পাওয়া যায়, তখন রপ্তানিতে তারা নিরুৎসাহিত হন। রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনতে হলে শুল্ক কাঠামো যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করতে হবে।বজলুল হক খন্দকার বলেন, বাংলাদেশে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বাড়ছে। তাই সহজেই করজাল বাড়ানো সম্ভব। শহরের বাইরেও কর দেওয়ার অনেক সামর্থ্যবান মানুষ আছেন।ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, দেশে কর ছাড়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অর্থমূল্যের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কারা এর সুবিধাভোগী এবং আর্থসামাজিক অর্থনীতিতে তাদের অবদান কী, সে বিষয়ে স্পষ্টতার অভাব রয়েছে। তবে কোন খাতে ছাড় কমানো যেতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি তিনি।